মাননীয় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মোঃ সানাউল্লাহ (অব:) মহোদয় এঁর জীবনবৃত্তান্ত
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মোঃ সানাউল্লাহ |
মাননীয় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মোঃ সানাউল্লাহ(অব:) গত ২৪নভেম্বর ২০২৪ তারিখ নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোলে ১৯৬৮ সালের০১ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১নং নাচোল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাচোল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এবং নাচোল কলেজ থেকে যথাক্রমে প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। ১৯৮৬ সালের জুলাই মাসে তিনি ১৮তম বিএমএ লং কোর্সে ক্যাডেট হিসেবে বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমীতে যোগদেন এবং ১৯৮৮ সালের জুন মাসে পদাতিক বাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। প্রশিক্ষণে সর্ব বিষয়ে সর্বশ্রেষ্ঠক্যাডেট হিসেবেতিনি মহামান্য রাষ্ট্রপতির‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন।
পেশাগত জীবনে এবং প্রশিক্ষণে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফজল অসামান্য সাফল্য অর্জন করেন। তিনি আর্মি স্টাফ কোর্সে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ফলশ্রুতিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় স্টাফ কোর্স করার যোগ্যতা লাভকরেন। তিনি ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্সেও সর্বোচ্চ মানপ্রদর্শন করেন। দেশে তিনের অধিক সামরিক প্রশিক্ষণে প্রথম স্থান অধিকার করায়তিনি ‘এসইউপি’ বা ‘সেনা উৎকর্ষ পদক’ লাভ করেন। এছাড়া তিনি তাঁর কমান্ড দক্ষতার জন্য দু’বার সেনাবাহিনী প্রধানের প্রশংসা লাভ করেন।
দেশে বহুবিধ প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মোঃ সানাউল্লাহ (অব:) সমরবিদ্যা,ভূকৌশল এবং গোয়েন্দা বিষয়ে বিভিন্নবৈদেশিক প্রশিক্ষণ লাভ করেন। এর মধ্যে আছে ইউ এস আর্মি কমান্ড এন্ড জেনারেল স্টাফ অফিসার্স কোর্স, যুক্তরাষ্ট্র; হাইয়ার ডিফেন্স ম্যানেজমেন্ট কোর্স, ভারত; মিড ক্যারিয়ার কোর্স,পাকিস্থান; এবং, ইন্টারন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স ডাইরেক্টরস কোর্স, যুক্তরাজ্য। হাইয়ার ডিফেন্স ম্যানেজমেন্ট কোর্স (ভারত) এবং মিড ক্যারিয়ার কোর্স (পাকিস্তান)-এ তিনি শ্রেষ্ঠ আন্তর্জাতিক ছাত্র/অংশগ্রহণকারী বিবেচিত হন।
দীর্ঘ৩৪ বছর ৭ মাসের কর্মজীবনে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে কমান্ড পর্যায়ে পদাতিক ব্যাটালিয়ান ও ব্রিগেড কমান্ড এবং কম্যান্ডান্ট আর্মি সিকিউরিটি ইউনিট অন্যতম। এছাড়া, আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডক্ট্রিন কমান্ডের ট্রেনিং ডিভিশনের প্রধান হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। স্টাফ অফিসার হিসেবে তিনি জিএসও-৩ (অপারেশন), ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেড; জিএসও-২, সামরিক অপারেশনস পরিদপ্তর; এবং, কর্নেল জেনারেল স্টাফ, ডিজিএফআই-এর দায়িত্ব পালন করেন। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফজল একজন “ডিসটিংগুইষ্ট প্রশিক্ষক”। প্রশিক্ষক হিসেবে তিনি ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ এবং স্কুল অফ ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিকস্-এর রণকৌশল শাখার প্রশিক্ষক/ডাইরেষ্টিং স্টাফ ছিলেন।
তিনি জাতিসংঘ শান্তি মিশনে ১৯৯৪-১৯৯৫ সময়ে সোমালিয়ায় এবং ২০০৩-২০০৪ সময়ে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফজল ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ, মিরপুর, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ, মিরপুর, ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি কমান্ড অ্যান্ড জেনারেল স্টাফ কলেজ, যুক্তরাষ্ট্র এবং কলেজ অফ ডিফেন্স ম্যানেজমেন্ট, ভারত-এর অ্যালামনাই। সেনাবাহিনী থেকে অবসরের পূর্বে তিনি ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং একইসাথে তেহরানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সামরিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।
সামরিক চাকুরীর পাশাপাশি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফজল বিভিন্ন সময়ে অপরাপর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি একাধিক স্কুল ও কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন। তিনি একাধারে কুর্মিটোলা গলফ্ ক্লাবের ক্লাব ক্যাপ্টেন এবং বাংলাদেশ গলফ্ ফেডারেশন এর সেক্রেটারী জেনারেল ছিলেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সবচেয়ে বড় হাউজিং প্রকল্প ‘জলসিঁড়ি আবাসন’ এর পরিচালনা পর্ষদে তিনি একজন সদস্য ছিলেন। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফজল একাধিক সামাজিক এবং সেবামূলক উদ্যোগের সাথে সম্পৃক্ত আছেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মোঃ সানাউল্লাহ (অব:) তিনটি স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেছেন। এগুলো হল মাস্টার্স ইন ডিফেন্স স্টাডিজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (প্রথম শ্রেণীতে প্রথম), মাস্টার্স ইন মিলিটারী আর্টিস এন্ড সায়েন্স (যুক্তরাষ্ট্র) এবং মাস্টার্স ইন ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ, ভারত (প্রথম শ্রেনী, ডিসটিংসনসহ)। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস-এ একজন পি এইচ ডি রিসার্চ ফেলো। তাঁর আগ্রহ ও গবেষণা ক্ষেত্রসমূহ হলো ‘গণতন্ত্র ও জাতীয় নিরাপত্তা’, ‘ভূ-কৌশল ও ভূরাজনীতি’,এবং,‘সমরবিদ্যা ও সামরিক বিবর্তন’।
তাঁর সহধর্মিনী শাহীদা চৌধুরী। তাঁদেরএক পুত্র ও এককন্যা সন্তান রয়েছে।